শ্রীনগরে ৩ বছরেও রাস্তার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় টেন্ডার বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:০৯ PM, ০৬ মে ২০২১

শ্রীনগর উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নে বিবন্দী-পাঁচলদিয়া-কাজীপাড়া প্রায় ২ কিলোমিটার এলজিইডির একটি রাস্তার সংস্কার কাজ ৩ বছরে শেষ করতে না পারায় টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। তবে কাজ পছন্দ না হওয়ায় ঠিকাদারকে কোন বিল পরিশোধ করা হয়নি বলে জানিয়েছে উপজেলা এলজিইডি।

শ্রীনগর ও লৌহজং উপজেলার সংযোগ সড়কটিতে অত্র এলাকার প্রায় ৫০/৬০ হাজার মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়ে গেছে। এছাড়াও এই অঞ্চলের প্রায় ১৫টি গ্রামের শতশত কৃষকের উৎপাদীত ফসল বিক্রি ও সংরক্ষণের জন্য সহজতম একমাত্র রাস্তাটি তারা ব্যবহার করতে পারছেন না। বেহাল রাস্তার কারণে কৃষকরা অতিরিক্ত খরচ করে ও সময় অপচয় করে অন্য রাস্তায় কৃষি পণ্য বাজারজাত করছেন। বিশেষ করে কৃষক আলু ও ধান নিয়ে এই পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগে পরছেন। এর আগে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণেই মেসার্স মিজান এন্ড ব্রাদার্স নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মো. মিজান শেখ রাস্তায় কচ্ছপ গতিতে কাজ করে বেহাল করে রাস্তাটি বেহাল করে রাখে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা দ্রæত সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার জন্যএকাধিকবার তাগিদ দিলেও ৩ বছরেও কাজ আর সম্পন্ন করেনি ঠিকাদার। এনিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সচিত্র খবরের শিরোনামও হয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার বিকালে কাজ বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী।

এলাকাবাসী দাবী করেন, পরবর্তী কাজের টেন্ডার যখনই হোক এই পরিস্থিতিতে রাস্তায় যাতায়াত করা একেবারেই মুসকিল হয়ে পরেছে। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে রাস্তায় বড় আকারের বিছানো ভাসমান কংক্রিট যদি রোলার দিয়ে চাপা দেওয়ার কাজটি করা হয়, তাহলে মানুষ বিশেষ প্রয়োজনে এই রাস্তায় অন্তত পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে পারবেন। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা। অপর একটি সূত্র জানায়, মিজানের বড় ভাই শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম কানন একই এলাকার বিবন্দী-তন্তর প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করণের জন্য টেন্ডার নিয়ে খোড়াখুড়ি করে প্রায় সাড়ে ৩বছর যাবত রাস্তাটি বেহাল করে রাখছেন। এতে করে বেহাল রাস্তায় চলাচলে এলাকাবাসী চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এঅবস্থায় ভুলে ওই রাস্তায় গিয়ে অনেক পথচারী বিপাকে পরছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঠিকাদার মিজান রাস্তা খোড়াখুড়ি শুরু করে। গত ২৪/০৯/২০১৯ তারিখে কাজের মেয়াদকাল শেষ হলেও পুনরায় তিনি আগামী কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে নিলেও গত কয়েক মাস যাবত রাস্তায় কোনও কাজ করেনি। সংস্কার কাজ শুরু পর থেকেই কাজের অগ্রগতি না থাকায় উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী অফিস ৫ বার ও জেলা এক্সচেঞ্জ থেকে ১ বার তাগিদ জানিয়ে চিঠি প্রদান করে মিজানকে। অপরদিকে গত কয়েক মাস আগে ঢাকার পিডি অফিস থেকেও কাজের অগ্রগতি সমন্ধে রাস্তা পরির্দশন করা হলে কোন কাজ হয়নি। কাজের তদারকীর দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান। তিনিও দায়িত্বে থেকে কাজের বিষয়ে মিজানের সঙ্গে পেরে উঠেননি। ঠিকাদার মিজান শেখ কারও কথার কর্ণপাত করেননি।

ঠিকাদার মো. মিজান শেখের কাছে এবিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এব্যাপারে জানতে শ্রীনগর উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী মো. রাজিউল্লাহ বিবন্দী-পাঁচলদিয়া হয়ে কাজীপাড়া রাস্তার টেন্ডারটি বাতিলের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কাজের জন্য পুনরায় খুব শীঘ্রই টেন্ডার হবে। বেহাল রাস্তায় মানুষের হাঁটা চলাফেরার লক্ষ্যে দ্রæত বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন :