সিরাজদীখানে নাব্য সংকটে বয়রাগাদী খাল

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের একমাত্র খালটি নাব্যতা সংকটের কারণে শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। এতে সেচ কার্য যেমন ব্যহত হচ্ছে তেমনি বিলুপ্ত হচ্ছে দেশী মৎস সম্পদ। শুধু মাত্র বর্ষা মৌসুমে খালটিতে পানি থাকে তাও সামান্য পরিমান। বছরের বেশির ভাগ সময়ে পানি না থাকায় প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। ঠিক মতো খনন কাজ না হওয়ায় এ খালটি শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে ।
গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের ফকির বাড়ি থেকে বাহেরঘাটা বাজার পর্যন্ত খালটি শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় বছরের ৮-৯ মাস খালটি শুকিয়ে থাকে। এর ফলে খাল পাড়ের মানুষ ও কৃষক সেচ কাজে পানি পাচ্ছে না।
জানা যায়, এক সময়ে এ খাল দিয়ে বিভিন্ন বড় বড় নৌযান সিরাজদীখান বাজারসহ উপজেলার বাসাইল, কেয়াইন, শেখরনগর, রাজানগর, চিত্রকোট ইউনিয়ন এবং আড়িয়াল বিলে চলাচল করতো। খালটি শুকিয়ে যাওয়ায় এখন নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকাবাসীরা বলছেন যথাযথ ভাবে খালটি খনন করলে পানি প্রবাহ সচল করে দিলে কৃষি জমি গুলোসহ খাল পাড়ের মানুষ উপকৃত হবে। খালটি খনন করে পানি প্রবাহ সচল করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
গোবরদী গ্রামের বাসিন্দা আল মামুন বলেন, একযুগ আগে উত্তর গোবরদী ব্রীজ থেকে ট্রলার যোগে কম খরচে তালতলা বাজার এবং সিরাজদীখান বাজারে চলাচল করতো এলাকাবাসী। কিন্তু সেই ট্রলার বন্ধ হয়ে গেছে এক যুগ আগে। দুই পারের হাজার হাজার হেক্টর জমির পানি নিয়ে সেচ দিতে পারতো। কিন্তু এখন খালে পানি না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। খালে পানি থাকলে উপকৃত হতো কৃষকরা । তাই আমাদের দাবি খালটি খনন করে দেওয়া।
বয়রাগাদী ইউপির সদস্য মো. ইয়াসিন বলেন, এ খালটিতে একসময়ে প্রচুর পানি ছিল এবং দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। ঠিক মতো খাল খনন না হওয়ায় এবং প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় বছরের বেশির ভাগ সময় খালটি শুকিয়ে থাকে। এর ফলে খালটি এখন মৃত্যুর পথে। প্রশাসনের কাছে দাবী জানাচ্ছি এই খালটি খনন করে পানি প্রবাহ সচল করে দেওয়ার। এ খালটি খনন হলে কৃষক ও এলাকাবাসী উপকৃত হবে।
বয়রাগাদী ইউপির চেয়ারম্যান গাজী মো. আলাউদ্দিন বলেন, ইউনিয়নের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ এ খালটি। এ খাল দিয়ে ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় ট্রলার ও নৌকাযোগে বিভিন্ন স্থানে মালামাল বহন হতো এবং মানুষ বাজার থেকে আসা যাওয়া করতো। এই খালটি ঠিক মতন খনন না হওয়ায় পানি প্রবাহ একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। আমি এ বিষয়ে ইউএনও স্যারের সাথে আলাপ-আলোচনা করবো। যাতে এই খালটি খনন করে পানি প্রবাহ সচল করে দেয়।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, যে সব খাল শুকিয়ে যাচ্ছে, সেসব খালের একটি তালিকা করতে হবে। সেই তালিকা নতুন বছরে খননের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাঠাবো। তারপর তারা অনুমোদন দিলে আমরা সেসব খাল খনন করবো। এছাড়া এ বছর কয়েকটি খাল খনন করা হচ্ছে।#