শ্রীনগরে সড়ক ছিদ্র করে ইউপি সদস্য’র রমরমা ড্রেজার বাণিজ্য!

শ্রীনগর উপজেলার সদরে একটি ব্যস্ততম পাকা সড়ক ছিদ্র করে ছাড়পত্র বিহীন ড্রেজার বাণিজ্য করছেন এক ইউপি সদস্য। উপজেলার সদর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ মো. হুমায়ুনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সরকারি রাস্তাটি ছিদ্র করার অভিযোগ উঠে। উপজেলার ঝুমুর সিনেমা হল রোডের রানী হাসপাতালের সামনে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির সামান্য নিচ দিয়ে বোরিং করে ড্রেজার পাইপ লাইনটি নেওয়া হয়েছে। এতে রাস্তাটি দেবে ও ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঝুমুর সিনেমা হল রোডের রানী জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তার পূর্ব-পশ্চিম দিকে পাকা ছিদ্র করে অবৈধভাবে ড্রেজারের পাইপ লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সড়কের পূর্ব পাশে শ্রীনগর-গোয়ালীমান্দ্রা খালের মাঝখানে ড্রেজার ষ্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। জানা গেছে, রাতের আঁধারে এখানে বাল্কহেড থেকে বালু ওই ড্রেজারের উত্তোলণ করা হচ্ছে। এসব বালু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। ড্রেজার ইঞ্জিনের বিকট শব্দে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি এখানকার বসবাসকারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় সপ্তাহ ধরে ইউপি সদস্য শেখ মো. হুমায়ুন ড্রেজার ষ্টেশনটি স্থাপন করেন। এর আগে হঠাৎ করে রাস্তাটি ছিদ্র করে ড্রেজারের পাইপ লাইনের সংযোগ দেন তিনি। বেশীর ভাগ সময়ে রাতেই এখানে বাল্কহেড থেকে এসব বালু উত্তোলণ করা হচ্ছে। ড্রেজারের বিকট শব্দে আশপাশের বসতবাড়িগুলোতে মানুষের বসবাসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। জনগণের দুর্ভোগের সৃষ্টি করে একজন জনপ্রতিনিধির এ ধরণের কাজকর্মে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, শ্রীনগর সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য শেখ মো. হুমায়ুন এলাকায় মাটি সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। রাস্তা ছিদ্র ভেদ করে পশ্চিম দিকে মন্দির সংলগ্ন পোদ্দার পাড়া বসতবাড়ির ওপর দিয়ে অবৈধভাধে ড্রেজারের পাইপ লাইনটি নেওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। অপরদিকে শ্রীনগর চকবাজার সংলগ্ন জোড়া সেতুর নিচ দিয়ে বালু ভর্তি এসব বাল্কহেড সেতুর পিলারে ধাক্কা/ঘেঁষা লাগার মত ঘটনা ঘটছে। এতে করে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পাড়ে।
ইউপি সদস্য শেখ মো. হুমায়ুনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই বছর আগেই এখান দিয়ে আমার ড্রেজারের লাইনটি করা। রাস্তা ছিদ্র করে ড্রেজার পাইপ লাইন নেওয়ার পারমিশন আছে কি’না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ কাজে তার কোনো পারমিশন নেই। জনপ্রতিনিধি হয়ে রাস্তার ক্ষতি করাসহ জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে অবৈধভাবে ড্রেজার বাণিজ্য কত’টা যুক্তিসঙ্গত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাহলে কি করে খাব?
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণব কুমার ঘোষকে এ বিষয়ে অবহিত করা হলে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (এলজিইডি) সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে শ্রীনগর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. রাজিউল্লাহ্ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে পারমিশন ছাড়া সড়ক ছিদ্র করা অসম্ভব। এটা অন্যায়। খোঁজ খবর নিয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নিচ্ছি।