শ্রীনগরে সার নিয়ে ডিলারের কারসাজি

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বিসিআইসি ও বিএডিসি’র সার ডিলারদের কারসাজিতে সারে অতিরিক্ত দাম রাখার অভিযোগ উঠেছে।উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নে তালিকাভুক্ত সার ডিলারের সংখ্যা দুটি।ভাগ্যকুল বাজারে মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স শেখ এন্টারপ্রাইজের ডিলার যথাক্রমে আব্দুর রশিদ খান ও শেখ শাহজাহান।প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে খান এন্টারপ্রাইজের ব্যানারে সার বিক্রি করছেন শেখ এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার শেখ শাহজাহান।অপরদিকে নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে (শেখ এন্টারপ্রাইজ) একই বাজারের একটি দোকানের সাটারের উপরদিকে নেমপ্লেট সাটিয়ে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন এই দোকানটি সারাক্ষণ বন্ধই থাকে।এর ডিলার শেখ শাহজাহান এটিকে সারের গোডাউন হিসেবে রাখছেন।ডিলার দুটি পৃথক পৃথকভাবে সার উত্তোলন করলেও বিক্রি করছেন খান এন্টারপ্রাইজের ব্যানারে ডিলার শেখ শাহজাহান।খান এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার আব্দুর রশিদ খান কাগজপত্রেই শুধু দৃশ্যমান।
সিন্ডিকেটটির কারসাজিতে উত্তোলনকৃত সারের একটি বড় অংশ নৌপথে অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রতি বস্তা সারে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে কোন কোন সারের বস্তায় ১৫০ টাকাও পর্যন্ত বেশি রাখা হয়।এসব সার বিক্রির ক্ষেত্রে নিদিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানের মূল্য রশিদ দেওয়া হয়না।সরেজমিনে গিয়েও এর সত্যতা পাওয়া যায়।
দেখা গেছে, ভাগ্যকুল বাজারের সার ডিলার খান এন্টারপ্রাইজের ব্যানারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন শেখ এন্টারপ্রাইজের ডিলার শেখ শাহজাহান।এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ শাহজাহান বলেন, দুটি একই প্রতিষ্ঠান।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করেই সারের ব্যবসা করছি।আমার দোকানে এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আতিকুল রহমান সপ্তাহে ৪ দিন আসেন। তিনি সবই জানেন।খান এন্টারপ্রাইজের বিষয়ে তিনি বলেন এটি আমার প্রতিষ্ঠান।তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠান কোনটি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন খান এন্টারপ্রাইজ আমার আপন ভাই (আব্দুর রশিদ খান) তাই তার ব্যানার আমার প্রতিষ্ঠানে লাগিয়েছি।আপনি শেখ আর উনি খান কিভাবে আপন ভাই হন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আপন ভাইয়ের চেয়েও বেশী।
সারের অতিরিক্ত দাম রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, কি করবো সামান্য বেশী তো রাখতেই হয়।আমি এখন লোকশানে সার বেচবো আপনারা কিনবেন?
এ বিষয়ে মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার আব্দুর রশিদ খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এভাবেই সার বিক্রি করছি।এটা কি নিয়মের মধ্যে পরে কিনা এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি এড়িয়ে যান।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল রশিদ খান শ্রীনগর উপজেলার সার ডিলার সমিতির সভাপতি।
ভাগ্যকুল ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মির্জা আতিকুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কৃষকের অভিযোগ না থাকলে কোন সমস্যা নেই।ভাগ্যকুলে দুটি ডিলারের মধ্যে খান এন্টারপ্রাইজের নামে সার বিক্রির দোকান দেখা গেলেও অপরটির কোন বিক্রয় কেন্দ্র নেই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি।যদি কেউ অভিযোগ করেন তাহলে বিষয়টি দেখা হবে।
অপর একটি সূত্র জানায়, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে উপজেলা কৃষি অফিসের তালিকাভুক্ত সার ডিলারদের মধ্যে কোন কোন ইউনিয়নে নামে মাত্র ডিলারদের প্রতিষ্ঠান থাকলেও এগুলো বেশীরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে।সিজনে শুধু ডিলাররা প্রয়োজনীয় সার উত্তোলন করে বিক্রি করেন।ডিলারদের তালিকা অনুযায়ী কৃষি অফিসের সংশ্লিষ্টজনরা যদি মাঠে অনুসন্ধানে নামেন তাহলেই প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।এমনও সারের ডিলার আছেন তাদের নামে সার উত্তোলন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সংশ্লিষ্ট ওই ডিলারের নিজ এলাকায় নেই কোন সার বিক্রয় কেন্দ্র।স্থানীয় কৃষকরা ডিলার হিসেবে তাদেরকে ঠিকমত চিনেন ও না।সঠিক তদারকী করা হলে ডিলাররা সার নিয়ে কারসাজি করতে পারবে না।