শ্রীনগরে সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দলিল লেখকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
নৈশপ্রহরী যেন বড় অফিসার

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে অযৌক্তিক আবদার পূরণের দাবীতে সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ২ দিনের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দলিল লেখকরা।গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মধ্যস্ততায় বিতর্কিত দলিলটি সম্পাদণ করার সমঝোতায় মীমাংসা হয়েছে বলে জানা যায়।পরে মঙ্গলবার দুপুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলিল লেখকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয়।
এর আগে গত সোমবার দুপুরে দলিল লেখক মো. হাবিব একটি দলিল সম্পাদণের জন্য সাব-রেজিস্ট্রার রেহেনা বেগমের কাছে একটি দলিল দাখিল করেন। সাব-রেজিস্ট্রার রেহেনা বেগম উপস্থাপিত নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখেন এখানে পর্চায় বেস্টেট সম্পত্তি রয়েছে তাও নামজারি করা নেই।এছাড়া কয়েকজন মালিকের নামে ১৭ শতাংশ জমির খাজনা গ্রহন করা হলেও এখানে একজন দাতা হয়েই পুরো সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছেন। এ মর্মে তিনি দলিল সম্পাদণে অসম্মতি জানান।
এতে পরের দিন দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ সিকদার সাব-রেজিস্ট্রারকে দলিল সম্পাদণের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।এক পর্যায় সাব-রেজিস্ট্রারকে কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ করে ফেলেন দলিল লেখকরা। এ সময় সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণ চেয়ে কলম বিরতির ডাক দেন। সাব-রেজিস্ট্রারের দাবি তাদের অযৌতিক দাবি মেনে না নেওয়ায় এমনটা করছেন। রেহেনা বেগমের বক্তব্য ছিল অন্যায়ভাবে তিনি এই দলিল করবেন না। দলিল লিখকদের দাবি ছিল অতিরিক্ত টাকা না পেলে সাব-রেজিস্ট্রার রেহেনা বেগম কোন দলিলে স্বাক্ষর করেন না। কোন কোন দলিল লেখক নৈশপ্রহরী মো. শুভর বিরুদ্ধেও নানা প্রশ্ন তুলেন। তারা বলেছেন, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নৈশপ্রহরী মো. শুভ সার্বক্ষনিক থাকেন সাব-রেজিস্ট্রারের এজলাশে ও খাস কামরায়। করেন বিলাশী জীবন-যাপন। চালান ৫ লাখ টাকার মোটরবাইক, হাতে লাখ টাকার আইফোন, পোষাক পরিচ্ছেদে তিনি যেন বড় অফিসার। অথচ নিয়ম অনুসারে নৈশপ্রহরির ডিউটি করার কথা রাতে অফিস পাহারায়। তাকে কোন দিনই রাতে সাব-রেজিস্ট্রারের অফিস পাহারায় দেখেননি তারা। শুভ নিয়মবহির্ভূত বিভিন্ন দলিল সম্পাদণের জন্য উভয় পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করে দেয়।
স্থানীয়রা বলছেন, ইউএনও’র মধ্যস্ততায় সাব-রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের মধ্যকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এবং কর্মবিরতির সুরাহ হলেও এখানে কার অভিযোগ সত্য? এনিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
মো. কামাল নামে এক দলিল লেখক জানান, দলিল লেখক হাবিবের ওয়েটিংয়ে থাকা দলিলটি মঙ্গলবার সম্পাদণ হয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ৩/৪টি নিয়মবহির্ভূত দলিল সৃজণের ঘটনা জানাজানি হলে বিভিন্ন সময়ে তা পত্র পত্রিকায় খবরের শিরোনাম হয়।
মো. শুভ হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নৈশপ্রহরীর কাজ করেন। নৈশপ্রহরীর কাজ কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সুদত্তোর দিতে পারেনি।
এ ব্যাপারে শ্রীনগর সাব-রেজিস্ট্রার রেহেনা বেগমের কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের একাধিক বার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ হোসেন পাটোয়ারী জানান, সাব-রেজিস্ট্রার মহোদয় সহ উভয় পক্ষকে জনগণ যাতে সুবিধাবঞ্চিত না হয় সে জন্য কাজ করে যাওয়ার জন্য বলেছি।আর টোটাল বিষয়টি তাদের উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি যাতে তারা বিষয়টি ভালো ভাবে দেখভাল করেন।