শ্রীনগরে লিজকৃত জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণের পায়তারা

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়িখাল ইউনিয়নের বালাশুর এলাকার নতুন বাজারের পাশে লিজকৃত জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণের পায়তারা চলছে। ব্যস্ততম বাজারটির দক্ষিণ পাশে নির্মাণাধীন আরসিসি পাকা স্থাপনার ফলে পার্শ্ববর্তী বাজারটির একাধিক গলি ও দোকানের সাটার আটকা পরায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। রাঢ়িখাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ বেপারীর নেতৃত্বে একই এলাকার আনছারউদ্দিন, হানিফ শেখ ও আব্দুল মান্নান বেপারীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। একসনা লিজ গ্রহিতারা লিজ আনার সুবাদে ওই জায়গায় বেজমেন্ট করে তার ওপর ৫-৭ সুতি রডের ব্যবহারে বহুতল ভবনের পিলার তৈরী করছেন। এতে স্থানীয় ভূমি তহশিলদার কাজ বন্ধ রাখতে বললেও প্রভাবশালী মহলটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্রমতে জানা যায়, রাঢ়িখাল মৌজায়, খতিয়ান নং- ১৭১-১৭৬, দাগ নং-৬০, মোট ১৬ শতাংশ জমির একসনা লিজ আনেন সংশ্লিষ্ট লিজ গ্রহিতারা। এই সুবাদে গত ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর তারিখে শ্রীনগর উপজেলার তৎকালীন ভূমি কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ শর্ত সাপেক্ষে লিজ গ্রহিতাদের ১৮টি সেমিপাকা দোকান ঘর নির্মাণের ছাড়পত্র দেন। ওই ছাড়পত্রে উল্লেখিত ২নং শর্তাবলীতে বলা আছে পার্শ্ববর্তী লিজি অথবা অন্যকারো ক্ষতিসাধন করা যাবে না। অথচ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পার্শ্ববর্তী নতুন বাজারের গলি ও অন্যান্য ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানের মুখ বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট লিজ গ্রহিতারা বহুতল পাকা ভবন নির্মাণের পায়তারা করছেন।
শনিবার সরেজমিনে গিয়েও তার সত্যতা পাওয়া যায়। দেখা যায়, বাজারটির দক্ষিণ পাশে বহুতল ভবনের জন্য সারিবদ্ধভাবে বেজমেন্ট ও আরসিসি পিলার নির্মাণের কর্মযজ্ঞ চলছে। এতে নতুন বাজারের বেশ কয়েকটি গলিসহ দুই সাটারী দোকান আটকা পড়ছে। বাজারের দক্ষিণ দিকে গলি দিয়ে মানুষ চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে গলিগুলো একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে।
বাজারটির দোকানীরা জানিয়েছে, ওই জায়গায় যেভাবে পাকা স্থাপনা করা হচ্ছে এতে তাদের দোকানসহ বাজার গলি বন্ধ হয়ে যাবে। কয়েকটি দোকানের সাটার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে। এ অবস্থায় বৃষ্টি মৌসুমে বাজারের গলিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। আশরাফ নামে এক ভুক্তভোগী জানান, হানিফ বেপারী ও তার লোকজন যেভাবে আরসিসি পাকা স্থাপনা করছেন এতে আমাদেও দোকানগুলো আটকা পড়ছে। গলির মাঝখানে আরসিসি পিলার নির্মাণ করা হচ্ছে। আমরা একাধিকবার অনুরোধ করেছি গলিগুলো খোলা রাখতে কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ বেপারী ও তার লোকজন প্রভাব খাটিয়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসনকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। অপর একটি সূত্র জানায়, মহলটি লিজকৃত দোকান চড়াদামে বিক্রি করছেন। প্রভাবশালীদের ভয়ে এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননা।
হানিফ বেপারী দেশের বাহিরে অবস্থান করার কারণে এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার ম্যানেজার মো. বাবুল বলেন, উপজেলা প্রশাসন ১৮টি দোকান ঘর নির্মাণের জন্য তাদেরকে পারমিশন দিয়েছেন। বেজমেন্ট করে আরসিসি পিলার করার পারমিশন এই নির্মাণের আওতায় পরে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমি জানি না। হানিফ বেপারী এভাবে করতে বলেছেন তাই করা হচ্ছে।
রাঢ়িখাল ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী মো. আমির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেমিপাকা টিনশেড করার কথা বলা হয়েছে। এখানে আরসিসি পিলার করা যাবে না। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে কাজ বন্ধ রাখতে বলে আসছি। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম তারা এখনও কাজ করছেন। আমি এসিল্যান্ড স্যারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।