শ্রীনগরে লগডাউনের সুযোগে সরকারী খাল ও পানি প্রবাহের পথ ভড়াটের মহোৎসব চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১০:২৬ PM, ১৭ এপ্রিল ২০২১

শ্রীনগরে লগডাউনের সুযোগে সরকারী মাটি দিয়েই সরকারী খাল ও পানি প্রবাহের পথ ভরাট করে দখলের মহোৎসব চলছে। গত কয়েকদিনে শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রতিটি দখলেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, শ্রীনগর বাজারের পুলিশ প্লাজার পশ্চিম পাশের ব্রিজের জায়গা সহ টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে সরকারী
জায়গা ভরাট করে দখলের অভিযোগ উঠেছে। এই কাজে ভেকু ব্যবহার হচ্ছে শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের নামে। সেখানে ব্রিজের নীচের ও আশ-পাশের খালের মাটি ভেকু দিয়ে কেটে ওই স্থানটি ভড়াট করা হচ্ছে। এই বিষয়ে শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোকলেছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খালের পানির প্রবাহ চলমান রাখার জন্য ভেকু দিয়ে মাটি সরানো হচ্ছে। কিন্তু সেই মাটি দিয়ে ব্রিজের এক পাশের প্রায় অর্ধেক সহ ওই এলাকার বদন কৃষ্ণ দাসের ছেলে মিল্টন গং সরকারী জায়গা ভড়াট করে সেখানে মার্কেট নির্মান করছে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন,দখলের বিষয়টি তার জানা নেই। চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলার ২ দিনপর দেখা যায় পানি প্রবাহের জন্য পুরো মাটি না সরিয়ে শুধু মাত্র দখলের জায়গা ভড়াট করে ভেকুটি চলে গেছে।

এব্যাপারে মিল্টন দাস সাংবাদিকদের বলেন, তারা কোন সরকারী জায়গা দখল করছেন না। তাহলে ব্রিজের অর্ধেক কেন টিন দিয়ে বেড়া দিয়েছেন এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

একই ভাবে উপজেলার ধাইসার-বাড়লিবাগ খালের ঘোষপাড়ার সামনের অংশ মুকুল ঘোষ গং ভড়াট করে দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক সময় খালটি শ্রীনগর থেকে আড়িয়ল বিলে প্রবেশের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হত। খালটি ভড়াট হয়ে গেল ওই এলাকার মানুষ চরম বিপাকে পরবে বলে স্থানীয়রা জানায়। তবে ভড়াটকারীরা দাবী করছেন খালটি তাদের নিজস্ব সম্পত্তি।

অপরদিকে, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ছনবাড়ি ব্রিজের পূর্বপাশের প্রায় ১শ গজ উত্তরে সরকারী জায়গা সহ ভড়াট করা হয়েছে। এই ভড়াটে ব্যবহৃত হয়েছে ব্রিজের নিচে জমে থাকা সরকারী মাটি। প্রায় আড়াইশ ফুট দীর্ঘ ভড়াটে ষোলঘর, পূর্ব দেউলভোগ, কল্লিগাও,হরপাড়া সহ বেশ কয়েকটি মৌজার জমির পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।ভরাটের কারনে অকেজো হয়ে পরেছে একটি কালভার্ট।

এর আগে বেজগাঁও বাস স্ট্যান্ড থেকে ৫০গজ দক্ষিনে বেজগাও-কুকুটিয়া সড়কের ব্রিজের মুখ বন্ধ করে ওই এলাকার পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে সেখানে উঠে যাচ্ছে মার্কেট।

শ্রীনগর উপজেলার খাল দখল ও পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করার যে প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে তা প্রতিকারের জন্য এখনি কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এখানকার পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পরবে বলে স্থানীয়দের ধারনা।

শ্রীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেয়া দেবনাথ সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে আমি শ্রীনগর বাজারের

পশ্চিম পাশের দখল বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে আবার দখলের বিষয়টি আমার জানা নেই। বাকী দখলগুলোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এব্যাপারে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণব কুমার ঘোষের বক্তব্য নেওয়ার জন্য ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

আপনার মতামত লিখুন :