শ্রীনগরে বাঁশের তৈরি পণ্যে জীবিকা নির্বাহ

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বাঁশের তৈরী বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন শ্রী সঙ্গীত কুমার দেব নামের ৩৫বছর বয়সী এক যুবক।তার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ থানার গোয়ালন্দ এলাকায়।তার বাবার নাম শ্রী সৃষ্টি কুমার দেব।তাদের পরিবারের সকল সদস্যদের মূল পেশা বাঁশের তৈরি বিভিন্ন হস্ত সামগ্রী তৈরী করে তা বিক্রি করা।তার পূর্ব পুরুষের পেশাও ছিলো এটা।বংশপরম্পরায় তিনিও এ পেশা বেছে নিয়েছেন।
বর্তমানে তিনি শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা, রাস্তাঘাট ও হাটবাজারে বাঁশের তৈরী পণ্য কাঁধে ও হাতে করে নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন।দিন শেষে সঙ্গীতের রাত কাটে শ্রীনগর বাজারে।তার সংগ্রহে রয়েছে বিভিন্ন আকার ও সাইজের নানান রংয়ের কুলা, ফলের ডালা, ঢোলা, খালই, ঝুড়ি, দোলনা, চালনসহ হস্তশিল্পের নানান রকম পণ্য সামগ্রী।তার হাতে থাকা ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের নান্দনিক এসব বাঁশের তৈরি পণ্য সামগ্রী নজর কারছে শিশুসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের।বাঁশের তৈরি এসব পণ্য ৫০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি।হস্তশিল্পের এসব পণ্য বিক্রি করে মাসে গড়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে তার।
জানা গেছে, ৫ ভাই বোনের মধ্যে সঙ্গীত দেব বড়।নিজস্ব ভিটাবাড়ি না থাকায় পিতা মাতাসহ পরিবার পরিজন নিয়ে গোয়ালন্দে ভাড়া বাসায় থাকেন সঙ্গীত দেবরা।পরিবারটি হস্তশিল্পের ওপর নির্ভরশীল।পুরো সংসার চলে বাঁশের পণ্য সামগ্রী তৈরী ও বিক্রির আয়ে।সঙ্গীত দেব বাঁশের এসব পণ্য শ্রীনগর উপজেলা ছাড়াও মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং, সিরাজদিখান উপজেলা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন।এখানকার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মেলা-উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরেন কুটির শিল্পের তৈরীকৃত বাঁশের পণ্য সামগ্রী।
এক সাক্ষাৎকালে সঙ্গীত কুমার দেব মুন্সীগঞ্জ টুডে কে জানান, হস্তশিল্পের বাঁশের পণ্য বিক্রি করতে বিক্রমপুরে এসেছেন তিনি।আপাতত অস্থায়ীভাবে থাকছেন শ্রীনগর বাজার এলাকায়।মাঝে মধ্যে পার্শ্ববর্তী সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলা বাজারেও অবস্থান করেন তিনি।ঘুরে ফিরে দৈনিক ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার বেচাকেনা হয় তার।পরিবারের সদস্যরা সবাই হস্তশিল্পের কাজের সাথে জড়িত।ভাড়া বাড়িতেই তারা বাঁশের এসব পণ্য তৈরী করেন।খুচরা বিক্রির পাশাপাশি পাইকারীরও এসব সামগ্রী বিক্রি করেন তার পরিবার।বর্তমানে বাঁশের তৈরি শিশুদের বিভিন্ন খেলনা বিক্রি হচ্ছে বেশী।পাশাপাশি সাংসারিক কাজে ব্যবহারযোগ্য পণ্য সামগ্রীর বেচাকেনাও ভালো।
সঙ্গীত কুমার দেব দুঃখ করে আরও বলেন, প্লাস্টিকের দাপটে পরিবেশ বান্ধব বাঁশের এই হস্তশিল্পটি প্রায় হারাতে বসেছে।তার পূর্ব পূরুষরা এ হস্তশিল্প পেশার সাথে ছিলেন তাই তিনি বংশপরম্পরায় এ পেশার সাথে জড়িত।ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পটি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি ও তার পরিবার।হস্তশিল্পের পণ্য সামগ্রী টিকিয়ে রাখতে ও নতুন প্রজন্মের কাছে বাঁশের তৈরি পণ্য সামগ্রীর পরিচয় ঘটাতে সরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।