শ্রীনগরে পুনরায় আলু চাষে প্রস্তুত করা হচ্ছে জমি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৩২ PM, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

শ্রীনগরে আলু চাষকে সামনে রেখে দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে পুনরায় জমি চাষ শুরু করেছেন কৃষক। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে টানা বৃষ্টির কারণে আগাম বপনকৃত প্রায় ৬’শত হেক্টর আলু জমি প্লাবিত হয়ে যায়। এর মধ্যে উপজেলার বীরতারা এলাকায় আগাম আলু চাষে শতশত কৃষক লোকসানের মুখে পড়েন। এছাড়া টানা বৃষ্টির কবলে উপজেলার কুকুটিয়া, তন্তর ও আটপাড়া এলাকায় আলু চাষীরা লোকসানের পাশাপাশি এচাষে বিলম্বনায় পড়েন।

দেখা গেছে, উপজেলার নিচু বিলের জমির পানি যেন নিস্কাশন হতে চাচ্ছেনা। সময় না থাকায় কিছুটা কাঁদামাটি যুক্ত জমিগুলো টিলার মেশিনে আগাম চাষ দেওয়া হচ্ছে। কারণ হিসেবে জানা যায়, এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় একটি হালকা চাষ দিতে পারলে জমি তারাতারি শুকাবে। নানা প্রতিকূলতার কারণে এবছর আলু চাষে বিলম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় করেই আলু চাষের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক। লক্ষ্য করা যায়, জমি চাষের পাশাপাশি কোনও কোনও জমিতে পুনরায় আলুবীজ বপন করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন খাল-বিল, সেতু-কালভার্টের মুখ ভরাটের কারণে নিদিষ্ট সময়ে ফসলী জমির পানি নিস্কাশনে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে দিনদিন এখানকার কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়ছে।

বীরতারা এলাকার কৃষক আবুল হোসেন (৫৫), সেলিম (৪৫), তোফাজ্জাল মোল্লা (৬০), জামাল হাওলাদার (৫৫) বলেন, গত বছরের লোকসান এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এবছর আলু চাষের শুরুতেই বৃষ্টিতে লোকসানে পরেছেন। ধারদেনা ও ঋৃণ করে পুনরায় আলু চাষ করছেন। কুকুটিয়া এলাকার কৃষক আলম মোল্লা বলেন, এখানকার আলু জমিগুলো নিচু। বৃষ্টির পানি জমে এচাষে প্রায় ১ মাসের বিলম্বনায় পরেছেন। এবছর ৭ কানি জমিতে (১৪০ শতাংশ হিসাবে ১ কানি) আলু চাষের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। গত বৃষ্টির কারণে জমিতে ছিটানো প্রায় ৫০ বস্তা সার ভেস্তে গেছে। ২ সপ্তাহ পরে জমিতে পুনরায় চাষ দিচ্ছি। আবহাওয়া ভাল থাকলে হয়ত জমিতে আলু বপনের কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে বীরতারা, তন্তর, আটপাড়া ও কুকুটিয়া ইউনিয়নে বেশী আলু চাষ হয়। উপজেলায় এবছর ২ হাজার ২’শত হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ডিসেম্বরের শুরুতে জমিতে আলুরবীজ বপন শুরু করেন এখানকার কৃষকরা। টানা বৃষ্টিতে বীরতারাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৬’শত হেক্টর আলু জমি পানিতে ডুবে নষ্ট হয়। এচাষে প্রতি কানি জমিতে (১৪০ শতাংশ) প্রায় ২ লাখ টাকার লোকসানের মুখে পড়েন কৃষক। নিজস্ব জমির ক্ষেত্রে এই লোকসানের পরিমান কিছুটা কম হতে পারে। পুনরায় বীজআলু, জমি হালচাষ, সার, শ্রমিক মজুরীসহ অন্যান্য খরচ শেষে আলু চাষে কৃষকদের দ্বিগুন খরচ হচ্ছে। সেই হিসেব অনুযায়ী জমিতেই কৃষকের উৎদপাদীত প্রতি মণ আলুর দাম পরবে কমপক্ষে ৮০০ টাকা করে।

উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টিতে প্রায় বপনকৃত প্রায় ৬’শত হেক্টর জমি নষ্ট হয়। জলাবদ্ধতার কারণে এচাষে কিছুটা বিলম্বনা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসণের লক্ষ্যে কিছু বাঁধ চিহ্নিত করা হয়েছে। কৃষকদের প্রণোদনার বিষয়ে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব বিষয়ে স্থানীয় সাংসদের সাথে আলোচনা চলছে।

আপনার মতামত লিখুন :