শ্রীনগরে ধান সংরক্ষণ ও বিক্রিতে ব্যস্ত কৃষক

বোরো ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই, রোদে শুকানোসহ সংরক্ষণ ও বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছে স্থানীয় কৃষাণ-কৃষাণী। বিস্তীর্ণ আড়িয়াল বিলের আগাম সব ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। এরই মধ্যে উপজেলার অন্যান্য চকে/বিলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে এসব এলাকায় জমির পাকা ধান কাটা পুরোদমে শুরু হবে ঈদুল ফিতরের পরে। অপরদিকে বিভিন্ন জাতের ধান সংরক্ষণ করা ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কৃষকের প্রয়োজনীয় অর্থ যোগানের লক্ষ্যে বিক্রি করা হচ্ছে ধান।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিল পাড়সহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙ্গিণায় প্রয়োজনীয় ধান সংরক্ষণ ও বিক্রি করার এমন দৃশ্যই লক্ষ্য করা গেছে।
ধান ঝাড়াই ও শুকানোর কাজে ব_্যস্ত নারীরা
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিখ্যাত আড়িয়াল বিলের ধান প্রায় কাটা শেষের দিকে। বিল সংলগ্ন এলাকাগুলোতে হাজার হাজার কৃষি শ্রমিক ও স্থানীয় কৃষকরা জমির সোনালী ফসল ঘরে তুলতে দিন রাত প্ররিশ্রম করে যাচ্ছেন। ধান ঝাড়াই ও রোদে শুকানোর কাজে নারীরাও কাজ করছেন সমান তালে। এছাড়াও কৃষকের নগদ অর্থের যোগান দিতে অনেকেই ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। লক্ষ্য করা গেছে, পাইকাররা স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয়কৃত বস্তাবন্দি ধান ট্রাক ও বিভিন্ন ট্রলিতে করে ধানের বড় পাইকারী বাজার কমলা ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় এক ধান ব্যবসায়ী বলেন, বোঙ্গায় মাড়াইকৃত ভিজা ধান ক্রয় করা হচ্ছে (ধানের মান অনুযায়ী) ৭৫০-৮৫০ টাকায়। এছাড়াও ঝাড়া শুকনো ধান ক্রয় করা হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, সরকারিভাবে ঝাড়া শুকনো ধানের কেজি প্রতি দাম ধরা হয়েছে ২৭ টাকা। সেই হিসেব অনুযায়ী প্রতি মণ ধানের দাম পরে ১০৮০ টাকা করে। এছাড়া ধান সংশ্লিষ্ট গুদামে পৌঁছে দেওয়া ও টানাটানিতে খাটা খাটুনীতো আছেই। তাই খোলা বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় পাইকারদের কাছেই ধান বিক্রি করতে বেশী স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। পাইকাররা বাড়িতে বাড়িতে এসে এসব ধান সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন বলেন তারা।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবছর প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক আড়িয়াল বিলের শ্রীনগর অংশেই ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে কৃষকের পাকা ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার কৃষি শ্রমিক আনা হয়েছে এখানে। উপজেলায় তালিকাভুক্ত কৃষকের সংখ্যা ২ হাজার জন। ১ জন কৃষক সরকার নির্ধারিত মূল্যে সর্বোচ্চ ৩ মেট্রিক টন ধান বিক্রি করতে পারবে। আগামী আগস্টে তালিকাভুক্ত কৃষকের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
স্থানীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, শ্রীনগরে উৎপাদীত ধান থেকে সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪৩৭ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি ধানের দাম ধরা হয়েছে ২৭ টাকা। এছাড়াও তালিকাভুক্ত মেল মালিকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি চাল ক্রয় করা হবে ৪২ টাকা দরে। এর আগে গত ৪ মে মঙ্গলবার সকালে খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস ন্যাযমূল্যে ধান সংগ্রহের ঘোষনা দেয়। ধান সংগ্রহের আনুষ্ঠাকি উদ্বোধন করেন শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণব কুমার ঘোষ।