শ্রীনগরে খুড়িয়ে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থা

চিকিৎসকসহ জনবলের সংকট চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবের মধ্যে দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা ব্যবস্থা। রাজধানী থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত প্রায় ৫ লাখ মানুষের বসবাস এই শ্রীনগরে। উপজেলা স্বাস্থ্য সেবার মান এখন প্রদীপের নিভু নিভু আলোর পর্যায়ে চলে এসেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পর্যায়ে মোট ৩৫ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৪ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য সেবা। এর মধ্যে অর্ধেক চিকিৎসকই কর্মস্থলে আসেন না। দেখার যেন কেউই নেই!
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৭ জন জুনিয়র কনসালটেন্ডসহ শূণ্য পদ রয়েছে ১১টি। ডেপুটেশনে আছে ১০ জন। এরা শুধু বেতন তুলে চলে যান। গত ৪ বছর ধরে মেডিসিন, নাক কান গলা, হৃদরোগ, অর্থপ্যাটিক, চর্ম ও যৌন, সার্জারী, ও চক্ষু বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্টের পদগুলো শূণ্য রয়েছে। সনোলজিস্টের অভাবে ৫ বছর ধরে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি চালু হয়ে উঠেনি। ইসিজি মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকার কারণে এই সেবা কার্যক্রমটিও বন্ধ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সে সেকশন চালু থাকলেও বেশীর ভাগ সময়েই রোগীদের এই সেবাটির জন্য উপজেলার অন্যান্য প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে যেতে দেখা যায়। হাসপাতালের সরকারি ২টি এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও ১টি দীর্ঘদিন যাবত নষ্ট। ১টি এ্যাম্বুলেন্স দিয়েই চলছে হাসপাতালে রোগী আনা নেয়ার কার্যক্রম। জরুরী কাজে এসব রোগীদের প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্সের ওপরই বেশীরভাগ সময় নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। এছাড়াও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কর্মীর অভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরসহ পানি নিস্কাশনের ড্রেনগুলো ময়লা আবর্জনায় ভরে থাকতে দেখা গেছে। লক্ষ্য করা গেছে, হাসপাতাল ভবনের আশ পাশে আগাছায় ভরা। এছাড়াও দেখা যায়, হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারে শূণ্য পদে অস্থায়ীভাবে এক জনকে কাউন্টার সামাল দিতে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ মোট পদের সংখ্যা ১৩৩টি। এর মধ্যে ৫৭টি পদই শূণ্য রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষ এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে সিংহ ভাগ রোগীই নি¤œআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। বাধ্য হয়েই এসব মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে এসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মুহাম্মদ রেজাউল হক জানান, শূণ্য পদগুলো পুরনের জন্য উধ্বর্তন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইসিজি মেশিন চলে এসেছে দুই এক দিনের মধ্যে চালু হবে।