মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে বড় কালীপুরা গ্রাম

আমিরুল ইসলাম নয়ন
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:৪০ PM, ২৯ মে ২০২১

ঘূর্ণিঝড়ের ইয়াসের প্রভাবে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীর পানি। এদিকে গত কয়েকদিনে ঢেউয়ের তোড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে মেঘনা নদী তীরবর্তী গজারিয়া উপজেলার বড় কালীপুরা গ্রামের অন্তত পাঁচটি বসত ঘর। একই অবস্থা পাশের তনু সরকার কান্দি গ্রামেরও। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে দুটি গ্রামের অন্তত অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।

সরজমিনে বড় কালীপুরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায় একের পর এক বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে নদী সংলগ্ন বসতবাড়ি ও ফসলী জমির উপর। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে বড় কালীপুরা ও তনু সরকারকান্দি গ্রামের অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবার। অনেকে আবার নিজের শেষ সম্বল টুকু নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন মিয়া বলেন, পেশায় তিনি একজন দরিদ্র কৃষক। তার শেষ সম্বল বসতভিটা টুকু নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার অবস্থায় রয়েছে এমত অবস্থায় নির্ঘুম রাত কাটছে তার। বসত ঘরটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার মতো আর্থিক সক্ষমতা টুকু নেই তার। ঘরটি যদি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় তাহলে মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে হয়তো খোলা আকাশের নিচে তাকে থাকতে হবে ।

আরেক ভুক্তভোগী হাজেরা বেগম জানান, মাথা গোঁজার মতো কোনো ঠাঁই নেই তার। ঘরের মাঝ বরাবর দেখা দিয়েছে ফাটল যেকোনো সময় সেটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে। নিজেরাই বসতঘরটি ভেঙ্গে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

আরেক ভুক্তভোগী মিনুআরা বলেন, আরো দুইবার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে তার পরিবার। জীবনের শেষ ভাগে এসে আবারো নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছেন তারা। পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই তাদের সামনে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয় ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর সাথে তিনি বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাঁশের বেড়া দিয়ে বালু ভর্তি ব্যাগ ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টির স্থায়ী সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে তিনি জানতে পেরেছেন। শীঘ্রই তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন :