মুক্তির দূত আলোর দিশারী- মুহাম্মদ ফারুক আহমদ

তোমার আগমনে, হে আলোর দিশারী
জ্বল জ্বল করছিল সারা বাংলার আকাশ
যেন নতুন সূর্যের আলোয়, ভোরের নির্মল হাওয়ায়
বাংলার নিপীড়িত জনগণ বুক ভরে নিয়েছিল
প্রশ্বাস………
তোমার কাঙ্খিত আগমনে, হে মুক্তির কান্ডারী
আশাহত জনপদে জেগেছিল এক সংগ্রামী মুখ
সবুজ-শ্যামল গায়ে, হিজল-তমাল বনে, মেঠোপথে
পাখিদের কলতানে আর রাখালি বাঁশির সুরে
বেজে উঠেছিল সুখ ………
আগমনে তব ঘুচে গিয়েছিল বুকের ভিতর পাথর চাপা শোক
উল্লাসে ফেটে পড়েছিল লক্ষ জনতা, মুখরিত ছিল রাজপথ
সারা বাংলার গন্ডি পেড়িয়ে জড়ো হয়েছিল লাখো লোক
প্রতিটি হৃদয়ে ভালোবাসা ছিল, ছিল মুক্তির দৃঢ় শপথ …….
গণমানুষের কার্যালয়ের সামনে মঞ্চ সাজানো ট্রাক
পচাত্তরের ঘাতকের দল জড়ো হতে পদে পদে দেয় বাঁধা
লক্ষ মানুষের ভৈরবী আগমনে সেদিন নিয়েছিল অপূর্ব এক বাঁক
কান্ডারী বঙ্গবন্ধু কন্যা, শেখ হাসিনা মনে ছিলনা কারো দ্বিধা ………
ওদের মনে ছিল ঈর্ষা, অন্তরে ছিল সদা ভয়
লক্ষ জনতা গাইছিল গান, জয় বাংলার জয়
আহা! যে নামে এত হুংকার, এত শক্তি সে আর কেউ নয়
সে তো মানব দরদী, মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা তার নাম
যার পিতার আদেশে লক্ষ বাঙালি চুকিয়েছে বুকের রক্ত দিয়ে
এই বাংলার স্বাধীনতার দাম ………..
এই নামের সাথে মিশে আছে গণমানুষের যুগযন্ত্রণার অমলিন স্মৃতি, ব্যথাতুর ইতিকথা
আছে ভাষাহীন বোবা কান্না, আর গৌরবময় ইতিহাস
আত্মত্যাগ আত্মগ্লানির বুক ফাটাজ্বালা দঃখী বাঙালির অনন্ত নরকবাস ………..
বহু প্রতিক্ষিত আগমনে তব, হে মুক্তির দূত এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ
প্রতি পদে পদে জীবনের ঝুঁকি তবুও মঞ্চে উঠলে তুমি
মুহুর্মুহু জ্বয়ধনী, প্রকম্পিত আকাশ বাতাস, মুখরিত জনগণ
তোমার ছোঁয়ায়, হে বঙ্গকন্যা পাপ মুছে গিয়ে ধন্যহল মাটি ও মানুষ, এ প্রিয় জন্মভূমি …….
শত অন্যায়, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে উঠলে গর্জে, তোমার উদাত্ত আহ্বানে
মাতোয়ারা হল লক্ষ জনতা, মুক্তির ফরমান নিয়ে ফেরেশতারা ছুটিল আকাশপানে ……..
সহসা গগনবিদারী আওয়াজে ঘটিল গ্রেণেড বিস্ফোরণ
কেউ কোনকিছু বুঝার আগেই শতশত লোক করিল শাহাদাত বরণ
কোনদিন কেউ কামনা করেনি এহেন পৈশাচিক আক্রমণ ……….
ধিক! শত ধিক!! দুঃখ ও কষ্টে ফেটে যায় বুক চোখ করে ছলছল
শতাব্দীর ঘৃণ্য এই যঘন্য হামলার পিছনে সেই পঁচাত্তুরের নরঘাতকের দল
সেই নরপিশাচ আর হায়েনারা মিলে ফুটালো গ্রেণেড, ছুটিল তাজা রক্তের ঢল
তবুও তুমি মানোনিকো হার, হারাওনি মনোবল
আগে থেকেই ওঁৎপেতে থাকা সেই নরপিশাচের দল
ওরা ভেবেছিল তোমাকে সরাতে পারলেই ফিরে পাবে বুঝি বাংলার মসনদ
তাই কাপুরুষের দল পেছন থেকে অতর্কিতে হামলা করেই খুশিতে হয়েছিল গদগদ ………
চারিদিকে শুধু শোকের মাতাম আর অসহায় মানুষের নিরব-নিথর লাশ
খুব কাছ থেকে চলে গেলেন আই ভি রহমান, ঘটিল জাতির চরম সর্বনাশ
ব্যথা-বেদনার ছায়াতে ঢেকে গেল বাংলার আকাশ ও বাতাস
পঙ্গু হল শতশত লোক, কত মানুষের থেমে গেল হায়, জীবনের ইতিকথা
রক্ত পিপাসু পাষন্ড হায়েনাদের কাছে পরাজিত হল এই বাংলার মানবতা
পঁচাত্তরের রক্তের দাগ না শুকাতেই বাংলার বুকে রচিত হল আরেক শুকের দিন
পনেরোর পর একুশ আগষ্ট, হে জনক, হে জননেত্রী
তোমাদের কাছে এ সংগ্রামী জাতির রয়েছে অনেক ঋণ ……….
ওরা জানতো না তোমার নামের মাহাত্ম্য
বংশের তেজ, মাতা ফজিলাতুন্নেছা আর পিতার অবদান
তুমিতো বাংলার চিরদুঃখী, চিরলাঞ্ছিত, চিরবঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সদাজাগ্রত একনিষ্ঠ প্রাণ
তুমিতো সয়েছো কতনা কষ্ট, নারকীয় জ্বালা, অবহেলা অপমান
সবকিছু সয়ে গাহিয়াছো তবু জয় বাংলার অমর অজর গান……….
সুখ-শান্তি ত্যাগ করে তুমি এ জাতির তরে কাটিয়েছো কত নির্ঘুম রাত
শত উত্থান আর পতনের পথ পাড়ি দিয়ে সয়েগেছো কত ঘাত-প্রতিঘাত
তবুও তুমি পড়নিকো নুয়ে নত করোনিকো তব শির
তুমিই মহান নেত্রী মোদের তুমিই জাতির বীর
তুমিই তো সেই মহাবিপ্লবী নারী, রাষ্ট্র নায়ক, দেখিয়েছ যে দেশী-বিদেশী অপশক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে
করেছ সফল এম. ডিজি, এস. ডিজি, ভিশন টুয়েন্টি টুয়েন্টি আর পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থে গড়ে ……….
বাড়িয়াছে আজ মাথা পিছু আয়, রেমিটেন্স আর সারা বাংলা উঠেছে জাগিয়া উন্নয়নের ছোঁয়ায়
এসবের সব সম্ভব হয়েছে কেবল তোমার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, দূরদর্শীতা আর জাতির পিতার স্বপ্ন এবং দোয়ায় ……….
চারিদিকে আজ জয়জয়কার, খুশির বন্যা ফিরে এসেছে শান্তির বার্তা, সকলের মুখে উচ্চকিত উন্নয়নের গান
আজ সবাই ধন্য, তোমার জন্য, হে শেখের বেটি, এ সবই তোমার কীর্তি, তোমার অবদান
এই বাংলার মাটি, বাংলার জল, ফুল ও পাখিরা ভালোবেসে তব তোমার আলোয়, তোমাতে হয়েছে লীন
দেশের মানুষ বুকের ভিতর আগলে রেখে পুজিবে তোমায়, হে মহান নেত্রী, শুধিবে তোমার পিতার রক্তের ঋণ …………….