মানবিকতা দেখাতে গিয়ে মিথ্যাচারের শিকার দুই ইউপি সদস্য

আমিরুল ইসলাম নয়ন
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১০:৪২ PM, ১৬ জুলাই ২০২১

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়ম হয়েছে এই মর্মে কিছু ছবি এবং একটি লেখা আজ ( বৃহস্পতিবার) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায় ১০কেজির পরিবর্তে চাল দেওয়া হয়েছে সাড়ে ৭ কেজি বা ৮কেজি করে। তবে খবর নিয়ে জানা গেছে যারা ৭ বা ৮ কেজি করে যারা চাল পেয়েছেন তারা কেউ ভিজিএফের তালিকাভুক্ত উপকারভোগী নয়। মানবিক কারণে তাদেরকে চাল দেওয়া হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে তাদের ঘরে খাবার না থাকায় মানবিক কারণে তাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে তবে বিষয়টিকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে যুক্ত করা হয়েছে ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের দুই ইউপি সদস্যের নাম। ওই দুই ইউপি সদস্য জানিয়েছেন সরকারি কাজ সঠিকভাবে পালন এবং মানবিকতা দেখাতে গিয়ে মিথ্যাচারের শিকার হয়েছেন তারা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই পোস্টে দেখা যায়, সাড়ে ৭কেজি বা কখনো ৮কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। ইউনিয়নটির ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন শিকদার আট বস্তা চাল তার বাড়িতে নিয়ে গেছেন বলে বলা হয় । ৮নং ওয়ার্ডের আরেক ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম তার ওয়ার্ডের ৮কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন। তিনি দুই কেজি করে চাল কম বিতরণ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয় ওই পোস্ট থেকে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে কথা হলে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার ওয়ার্ডে ৫০জন উপকারভোগীর মধ্যে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে। তারা সবাই পরিমাণে ১০ কেজি করে চাল পেয়েছেন। তালিকার বাহিরে দুজন লোক তারা আর্থিক সংকটে আছেন বলে তাকে জানালে তিনি মানবিক কারণে তাদের দুজনকে কিছু চাল দেন। সেটা পরিমাণে সাড়ে ৭ কেজি বা ৮ কেজির মত হবে। এই দুজন লোক তালিকাভুক্ত নয় তাদের মানবিক কারণে চাল দেয়া হয়েছে।

এদিকে ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন সিকদার জানান, করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গণজমায়েত না করে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চাল বিতরণের নিয়ম রয়েছে। তার ওয়ার্ডে উপকারভোগীর সংখ্যা ৬০জন। তারমধ্যে ২০ জন সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদে এসে চাল নিয়ে গেছেন বাকিদের চাল তিনি বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। প্রত্যেকে আঙ্গুলের ছাপ বা স্বাক্ষর দিয়ে চাল বুঝে নিয়েছেন। সকলে ১০ কেজি করে চাল পেয়েছেন কোন উপকার ভোগী ১০০গ্রাম চালও কম পাননি। বিশ্বাস না হলে লিস্ট ধরে উপকারভোগীদের বাসায় গিয়ে চাল মেপে দেখার চ্যালেঞ্জ করেন তিনি।

এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মোহাম্মদ লিটনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশেষ একটি মহল রাজনৈতিকভাবে তাকে ঘায়েল করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এই অপপ্রচার চালিয়েছে। তার ইউনিয়নে চাল বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি। এই ধরনের গুজব কাউকে কান না দেবার পরামর্শ দেন তিনি।

ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোকাররম হোসেন বলেন, চলতি বছর ১১৯ ৫জন উপকারভোগীকে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। অত্যন্ত সুচারুভাবে চাল বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কোথাও কোনো অনিয়ম হয়নি।

আপনার মতামত লিখুন :