ভাগ্যকুলে রমরমা ড্রেজার বাণিজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:০৬ PM, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুলে চলছে রমরমা ড্রেজার বাণিজ্য।ভরাট করা হ5চ্ছে অসংখ্য ফসলী জমি, জলাশয় ও পুকুর।অপরদিকে এসব ড্রেজারের দীর্ঘ পাইপলাইনের সংযোগের জন্য এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট কাটার পাশাপাশি করা হচ্ছে ছিদ্র। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সড়কগুলো এখন হুমকির মুখে পড়েছে।

ভাগ্যকুল এলাকার পদ্মা নদীর তীরবর্তী মান্দ্রা ফকির বাড়ি সংলগ্ন নদীতে ২টি, ভাগ্যকুল বাজারের পাশে ১টি ও মাঠপাড়া তালুকদার বাড়ির পাশে নদীতে ৪টি ড্রেজারের সাব-স্টেশন স্থাপন করে দেদারছে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

কামারগাঁও এলাকার মোকারদোকানের শহিদুল ইসলাম, মান্দ্রার সাবেক ইউপি সদস্য নাজিম সরদারসহ সিন্ডিকেট চক্রের অন্যতম সদস্য নুরজামান, আলতাফ, শামীম, আলী বেপারীগং আলাদা আলাদাভাবে এসব ড্রেজারের নিয়ন্ত্রণ করছেন বলৈ অভিযোগ উঠেছে। এই ভরাট বাণিজ্যে এলাকার বসত বাড়িঘর, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও কৃষিজমির ওপর দিয়ে যত্রতত্রভাবে ড্রেজারের পাইপ লাইন টানা হয়েছে। যতত্রতত্রভাবে এসব ড্রেজারের পাইপ টানার ফলে ফসলী জমিতে স্থানীয় কৃষকরা জমিতে বিভিন্ন কাজকর্মে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অবৈধ ড্রেজার চক্রের সদস্যদের ভয়ে ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই ড্রেজার ব্যবসায়ীদের তছরুপ নিরবে সহ্য করতে হচ্ছে তাদের।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, পদ্মা নদীর তীরবর্তী ভাগ্যকুল-মান্দ্রা বেরিবাঁধের পাশে ড্রেজারগুলো বালু উত্তোলন করছে। বেরিবাঁধের বিভিন্ন স্থানে সামান্য নিচ দিয়ে ছিদ্র করে এসব ড্রেজারের পাইপ লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সংযোগকৃত দীর্ঘ পাইপ লাইনগুলো স্থানীয়দের বসতবাড়ি ও কৃষিজমি ব্যবহার করে ভাগ্যকুল-দোহার সড়কের বাগানবাড়ি, বৌ বাজার, কামারগাঁও মোকারদোকান নামক স্থানে আঞ্চলিক সড়কটি ছিদ্র করে বিভিন্ন দিকে ড্রেজার লাইনের সংযোগ দেয় ড্রেজার ব্যবসায়ীরা। অবৈধভাবে দিনরাত সমান তালে ভাগ্যকুল, কামারগাঁও, বালাশুর, নতুন বাজারসহ আড়িয়াল বিল এলাকায় মাটি ভরাট বাণিজ্য করছে সংঘবদ্ধ ড্রেজার চক্রটি। এতে শতশত একর ফসলী জমি ও অসংখ্য জলাশয় হারিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে এসব ড্রেজার পাইপের কারণে স্থানীয় কৃষকরা জমিতে ফসল উৎপাদণে বিপাকে পড়েছেন। এছাড়াও মান্দ্রা বেরিবাঁধের কবুতরখোলা এলাকার স্থানীয় যুবলীগের কার্যালয়ের সামনে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ছিদ্র করে এক সাথে ৩টি ড্রেজারের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটটি স্থায়ীভাবে সংযোগকৃত এসব পাইপ লাইনের মাধ্যমে উপজেলার কোলাপাড়া ও রাঢ়িখাল ইউনিয়নের বির্স্তীণ ফসলী জমি ও রাস্তা ব্যবহার করে ভরাট বাণিজ্য করছে।

স্থানীয়রা জানায়, ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। মাঝে মধ্যে উপজেলা প্রশাসন ড্রেজার উচ্ছেদ অভিযান পরিচানা করলেও ফের চালু হয়ে যাচ্ছে এসব ড্রেজার। একটি সূত্র জানায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ক্ষতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের অনেকেই আছেন ড্রেজার বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত। বেপরোয়া ড্রেজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্বে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনও অসহায়। ড্রেজারের মেশিনের বিকট শব্দে নদী পাড়ের বসবাসকারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কিছুদিন আগে কামারগাঁও এলাকায় একটি জলাশয় ভরাটের ড্রেজার বিচ্ছিন্ন করা হলেও ফের ভরাটের চেষ্টা করা করছে সিন্ডিকেটটি।

ভাগ্যকুল এলাকার ড্রেজার সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য নুরুজামানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখনও ড্রেজার চালু করিনি। কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শুরু করবো। শহীদুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শ্রীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন :