প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়ার জৌলস

করোনার কারণে প্রায় ঘরবন্দি সবাই। কিন্তু তারপরেও গ্রীষ্মের রুক্ষতা ছাপিয়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল নিজের সৌন্দর্য তুলে ধরছে। প্রখর রৌদ্রে গাছে গাছে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া ফুল। এই ফুলের অপরুপ দৃশ্য যে কারও চোখে ও মনে এনে দিতে পারে শিল্পের দ্যোতনা। এমনটাই লক্ষ্য করা গেছে বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের বিভিন্ন রাস্তাঘাটসহ লোকালয়ের বাড়ির গাছ গুলোতে। যেন কৃষ্ণচূড়া ফুলের রক্তলাল দৃশ্য। এক অপরুপ মনমুগ্ধকর ভালবাসার অনুভুতি। আর এসব কৃষ্ণচূড়া ফুলের নিজস্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে বাধ্য করবেই যে কোন ফুলপ্রিয় পথচারীকে।
কৃষ্ণচূড়া ফুলের জাত মূলত ৩ প্রকার হয়ে থাকে। আমরা বেশীর ভাগ লোক এর নাম কৃষ্ণচূড়া হিসেবে জানলেও এর আরেকটি নাম রয়েছে গুলমোহর। এ নামটি অবশ্য সচারাচর শোনা যায়না। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রংয়ের মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতাও থাকে। এর মধ্যে কোনও কোনও ফুলের রং অতি গার লাল ও হালকা লাল হলুদও হয়ে থাকে। ফুল ফুটাকাল থেকে থোকায় থোকায় গাছের ডালে পর্যায়ক্রমে মাসব্যাপী কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুঁটতে থাকে।
এমনটি জানালেন এক নার্সারীর মালিক হোসেন মিয়া। তার নার্সারীতে প্রচুর কৃষ্ণচূরা গাছের চারা আছে। সৌখিন মানুষ কৃষ্ণচূরার চারা গাছ ক্রয় করতে বেশী আসেন। তারা বাড়ির সামনের রাস্তায় ও বাগানে এসব চারা গাছ বেশী রোপণ করেন। গাছের আকার অনুযায়ী ১০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত দামের কৃষ্ণচূড়ার চারা গাছ রয়েছে তার নার্সারীতে। এমনটাই বলেন হোসেন মিয়া। এছাড়াও তার নার্সারীতে রয়েছে বিভিন্ন জাতের কাঠ, ফুল ও ফলজ গাছের চারা। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও বাড়ির পাশের কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো অনেক ফুল ফুঁটতে শুরু করেছে। গাছের চার দিকে শুধু লাল রংয়ের ফুলেরই শোভা পাচ্ছে। সবুজের বুকে যেন লালের রাজত্ব। দূর থেকে মনে হয় ময়ূর তার রাঙা পেখম মেলে ধরেছে প্রকিতির মাঝে। প্রায় গাছেই ফুলের ভাড়ে ডালপালা হেলে পরতে দেখা গেছে।
লক্ষ্য করা যায়, কৃষ্ণচূড়ার গাছের ডালে ফুলের পরিমাণই বেশী ফুলের দাপটে পাতাগুলো চোখেই পরেনা। থোকায় থোকায় কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলো তার নিজের সৌন্দর্য মেলে ধরেছে। অনেক পথচারী কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে খানিকটা দাড়িয়ে পড়ছেন। এছাড়াও স্থানীয় তরুণ তরুণীরা নিজেদের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় প্রিয় কৃষ্ণচূড়া ফুলের ছাঁয়া তলে ছবি তুলছেন। লক্ষ্য করা যায়, বছরের এই সময়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার অনুভুতির কথাও প্রকাশ করছেন।
উপজেলার শ্রীনগর-তন্তর সড়ক, বেজগাঁও কুকুটিয়া সড়ক ও শ্রীনগর-ভাগ্যকুল সড়কের রাঢ়ীখাল এলাকায় প্রধান সড়কের বিভিন্নস্থানে বেশ কিছু কৃষ্ণচূড়া ফুলগাছ চোখে পরে। গাছগুলো ফুলে ঠাসা। ফুলগুলো তার আপন রুপ ও সৌন্দর্য প্রকৃতির সাথে মেলে ধরেছে। এ সময় বেশ কয়েকজন তরুণ- তুরুণীকে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে দাড়িয়ে ছবি তুলতে দেখা যায়।
আনিকা, রাজন, অসীম, সায়মনসহ অনেকেই বলেন, লকডাউনে কোথাও তেমন বেড়াতে যেতে পারছিনা। এখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। কৃষ্ণচূড়া গাছ গুলোতে প্রচুর ফুল ফুঁটেছে। দূর থেকে অনেক সুন্দর লাগছিল। কাছে এসেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে থমকে গেলাম। তাই বন্ধুরা মিলে এখানেই কিছুক্ষণ যাবত আড্ডা দিচ্ছি। কৃষ্ণচুড়া ফুল দেখে আমরা মুগ্ধ। এই ফুল এত সুন্দর কাছ থেকে না দেখলে এর সৌন্দর্য উপভোগ কার সম্ভব হতনা। তারা জানান, আমাদের মত এখানে অনেক পথচারী কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখতে খানিকটা দাড়ান। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।