এলজিইডির সেতু নির্মাণে দীর্ঘসূত্রিতা; ভাঙন আতঙ্কে সাতটি পরিবার

মুন্সীগঞ্জে গজারিয়া উপজেলাধীন গজারিয়া ইউনিয়নের সোনাইর কান্দি গ্রামের খালের উপর ২৪মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। পাইলিং এর কাজ শেষে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে সেতুটি নির্মাণ কাজ গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে খালের উভয় পাশের মাঠে ধসে পড়ে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত সাতটি বসতঘর। বিষয়টি সম্পর্কে এলজিইডি কি পদক্ষেপ নিয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে সেতুটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই’!
সরোজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সোনার কান্দি গ্রাম সংলগ্ন খালের উপর গজারিয়া ইউনিয়নের ৭ এবং ৮নং ওয়ার্ডের সংযোগ ঘটানোর জন্য একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নদীর দুই পাড়ের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে কোন সাঁকো না থাকায় বাধ্য হয়ে ৫টাকা করে নৌকা ভাড়া দিয়ে পার হতে হয় সাধারণ মানুষদের। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও বয়স্করা। এদিকে সম্প্রতি খালে জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়ায় স্রোতের তোরে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের সাতটি বসতঘর।
ভুক্তভোগী শাহ আলম জানান, গত কয়েকদিনে অব্যাহত ঢেউয়ে তার বসত ঘরের মাঝ বরাবর ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় সেটি বিলীন হয়ে যেতে পারে। এমত অবস্থায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে হচ্ছে তাদের।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা হিমেল হোসেন জানান, অন্তত সাতটি ঘর ভেঙে পড়ার মত অবস্থা। দায়িত্বশীলরা এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় হতাশ তারা। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি নির্মাণ কাজ আটকে থাকায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বারংবার সেতুটি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করতে জানিয়েছিলেন তারা।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে এলজিইডির গজারিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ইশতিয়াক আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে একটি সাঁকো নির্মাণ করে দিতে পারেন তবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে তেমন কিছু করার নেই তাদের। সেতু নির্মাণে ধীরগতি থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিক বার তাগাদা দিয়েছিলেন তিনি তবে তারা সেরকমভাবে রেসপন্স করেননি। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরে তারা পুনরায় আবেদন করে সময় আরেক বছর বাড়িয়েছেন। সেতুটির পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে সার্বিক অগ্রগতি মাত্র ৩০ শতাংশ।
বিষয়টি সম্পর্কে আরো জানতে সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভাঙ্গনের কথা শুনেছি তবে তবে এই মুহূর্তে আমাদের কিছু করার নাই।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মাহাতাব উদ্দিন কল্লোলের সাথে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাঁশ ও ভালো ভর্তি সিমেন্টের বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন তারা। এর বাহিরে তাদের তেমন কিছু করার নেই।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আবু তালেব ভূইঁয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, একাধিকবার বিষয়টি তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছেন। সেতু নির্মাণের দীর্ঘসূত্রতায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কয়েক হাজার মানুষ। সম্প্রতি ঢেউয়ের তোড়ে সাতটি ঘর ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।