ঈদ ছুটির প্রথম দিনে শিমুলিয়া ঘাটে ঘরমুখী যাত্রীদের ঢল

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দক্ষিনবঙ্গগামী ঘরমুখো যাত্রীদের ঢল দেখা গেছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাট এলাকায়। শুক্রবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাইভেটকার, মাইক্রো ও মোটরসাইকেল এ করে গন্তব্যে পৌঁছাতে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় এসে জড়ো হচ্ছে ঘরমুখো যাত্রীরা । গত কয়েক দিনের তুলনায় যানবাহনের চাপও বেড়েছে বহুগুণ।
এদিকে ফেরি স্বল্পতা ও ফেরিতে গনপরিবহন পারাপার বন্ধ থাকায় কারণে দক্ষিণবঙ্গের ঘরমুখো যাত্রীরা পরেছে ভোগান্তিতে। পল্টুনের ওপর দাঁড়িয়ে আছে হাজারো লোক। যখনই কোনো ফেরি আসছে, তখনই এরা হুমড়ি খেয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে ছুটে ফেরিতে উঠতে। গাদাগাদি করে তারা ফেরিতে দাঁড়িয়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। প্রতিটি ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার কারনে বিঘ্নিত হয়েছে গাড়ি পারপার। লোকজনের চাপ এতটাই বেশি যে, গাড়ি পর্যন্ত ঠিকমতো ফেরিতে উঠতে পারছিল না। ফলে সকালের দিকে দক্ষিণবঙ্গমুখী গাড়ির লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
শিমুলিয়াঘাট থেকে ছোট ছোট গাড়ি বা প্রাইভেট কারের লাইন দুই কিলোমিটার দূরে পদ্মাসেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত চলে গেছে। এতে দুপুর ১২টার দিকে ঘাট এলাকায় পারাপারের অপেক্ষায় ছিল প্রায় ৭শতাধিক ছোট বড় যানবাহন। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রীর চাপ কমে আসলে, ঘাট এলাকায় পারাপারের অপেক্ষায় থাকা ব্যাক্তিগত ও পন্যবাহী যানবাহনের চাপ কমতে কমতে বিকেল হয়ে যায়। এ নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ১০টি ফেরি সচল রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ৮৫টি লঞ্চ ও ১৫২টি স্পিডবোটসহ ৮টি ট্রলার রয়েছে।
পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে সেহরি সময় রাজধানী থেকে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে আসতে শুরু করে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ। স্পিডবোট ও লঞ্চঘাট যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ থাকলেও বাড়ি ফিরতে পেরে আনন্দিত যাত্রীরা।
এদিকে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় এই পর্যন্ত তিনটি স্পিডবোট চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি তিনদিনের জন্য ও অন্য দুটি একদিনের জন্য চলাচল স্থগিত করা হয়। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা এক ব্যাক্তিগত গাড়ির মালিক জানান, বাড়ি যাওয়ার জন্য সকাল ৫ টায় ঢাকা থেকে রওনা হয়েছি। সকাল ৬ টার দিকে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় এসে পৌছালেও যাত্রীদের চাপে ফেরিতে গাড়ি উঠানো সম্ভব হয়নি। রোজা রেখে এখানে রোদের মধ্যে বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। আর ভাল লাগছে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, লঞ্চ ও স্পিড বোট এর যাত্রী পারাপারের সংখ্যা বেড়েছে। সকাল থেকে প্রচন্ড রকমের যাত্রীদের চাপ রয়েছে। ফেরির জন্য দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা না করে মানুষ লঞ্চ স্পিডবোটে যাতায়াত করছে। স্পিডবোট ও লঞ্চঘাট এলাকায় পা ফেলানোর মত জায়গা নেই। ভোর থেকে ১৫২টি স্পিডবোট ও ৮৫টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে পূর্বের চাইতে কয়েকগুন। তবে এই নৌরুটে ১০টি ফেরি রয়েছে।#