আড়িয়াল বিলে কুমড়ার ক্ষেতে শ্বেতী রোগের আক্রমণ, প্রতিকার পাচ্ছে না কৃষক

আড়িয়াল বিলে মিষ্টি কুমড়ার ভিটায় শ্বেতী রোগের আক্রমণে পঁচে যাচ্ছে অসংখ্য কুমড়া।স্থানীয়রা ফসলের এ রোগটিকে বলছেন শ্বেতী রোগ।তবে স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় কুমড়ার এই শ্বেতী রোগটির বিজ্ঞানীক নাম হচ্ছে মোজাইক ভাইরাস।৫ থেকে ৬ বছর যাবত রোগটির হানায় আড়িয়াল বিল পাড়ের কুমড়া চাষীরা দিশেহারা হয়ে উঠেছেন।কোন ভাবেই এর প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছেন তারা।এতে কুমড়া ক্ষেতিতে বেশীর ভাগ উদ্যোক্তাই লোকশানের মুখে পড়ছেন।
শ্রীনগর উপজেলার শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের গাদিঘাট এলাকায় আবাদি কুমড়ার ভিটাগুলোতে মোজাইক ভাইরাস আক্রমণে কুমড়ার গাছসহ ফসল পঁচে যাওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।তারা বলছেন, কৃষি অফিসের লোকজন এ বিষয়ে তাদের কোনও খোঁজ খবর নেন না।তবে উপজেলা কৃষি অফিসের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই রোগের জন্য তারা স্থানীয় কৃষকদের সাথে মিটিং করছেন।কুমড়া ক্ষেতে মোজাইক ভাইরাস আক্রমণের লক্ষণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিষয়ে কৃষকদের জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।উপজেলায় এ বছর ৬শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়াসহ সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আড়িয়াল বিলের গাদিঘাট এলাকায় শতশত ভিটায় বিশাল আকারের মিষ্টি কুমড়ার চাষাবাদ করা হচ্ছে।এ জাতের কুমড়াকে স্থানীয়রা চৈত্রা কুমড়া হিসেবে ডাকেন।বিল জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কুমড়ার প্রায় ভিটায় মোজাইক ভাইরাসের (শ্বেতী রোগ) আক্রমণে গাছসহ অপরিপক্ক কুমড়া পঁচে যাচ্ছে।রোগ আক্রান্ত কুমড়ার সবুজ পাতা হলুদ বর্ণে পরিণত হয়ে শুকিয়ে গেছে।এতে মোজাইক ভাইরাস জনিত রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে পুরো কুমড়ার ভিটায়।
স্থানীয় কৃষক আমির হোসেন, নাজিমউদ্দিন, নুরুজামান, খলিলসহ অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ৫/৬ বছর ধরে কুমড়ার শ্বেতী রোগটির প্রতিকারে তারা যুদ্ধ করছেন।কৃষি কর্মকর্তারাও তাদের কোন খবর নেন না।কোন কোন অফিসার আসলেও কুমড়ার শ্বেতী রোগটি নির্মুলে প্রকৃত কীটনাশকের সন্ধান দিতে পারছেন না তারা।স্থানীয় কীটনাশক ও সার বিক্রেতাদের কাছে গিয়েও শ্বেতী রোগ দমনের জন্য কোন ওষুধ পাচ্ছেন না।শ্বেতী রোগের কারণে প্রতিবছর কুমড়া চাষে কাঙ্খিত ফলন হচ্ছে না।
আড়িয়াল বিলের ঐতিহ্য বহনকারী বড় জাতের এসব কুমড়া চাষে লোকশানের মুখে পড়ছেন।এই জাতের একেকটি কুমড়ার ওজন সাধারণত ৩০ থেকে ৮০ কেজি হয়ে থাকে।কোন কোন ভিটায় কুমড়ার ওজন ১’শত কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. শাহিনুর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাদিঘাট ব্লকের দায়িত্বে আছেন তিনি।কুমড়া ক্ষেতে ভাইরাস জনিত মোজাইক রোগে আক্রান্ত হওয়ায় পঁচন ধরেছে।লিফ হপার বা ছোট আকৃতির ফড়িং, সাদা মাছি, জাব, জেসিড পোকা এ রোগের অন্যতম বাহক।কুমড়ার মোজাইক ভাইরাস দমনে সুনির্দিষ্ট কীটনাশক এখনও নেই।তবে মোজাইক ভাইরাস রোগ দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক পরিমাণ মত স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।কৃষকদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।এই রোগ প্রতিরোধে কৃষকদের সচেতনতা অবলম্বন ও করনীয় সমন্ধে সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।